Now Reading
সবসময় এসি ব্যবহার ত্বকের উপর প্রভাব ফেলতে পারে

সবসময় এসি ব্যবহার ত্বকের উপর প্রভাব ফেলতে পারে

সবসময় এসি ব্যবহার ত্বকের উপর প্রভাব ফেলতে পারে

কর্মজীবি নারী দিনের বড় একটা সময় অফিস করেন। সকাল থেকে সেই সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিসে একটানা ডিউটি। সবার অফিসে কমবেশী শীতাতাপ নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা রয়েছে। শুধু অফিসেই নয় অনেকের ঘরেও রয়েছে এসি। আর গরমের দিন এলে তো কথাই নাই, এয়ার কন্ডিশনড ছাড়া চলেই না। কিন্তু আপনি কি জানেন আপনার ত্বকের উপর প্রভাব ফেলতে পারে এই এসি।

এসিতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় কেন?

ঠিক যে কারণে শীতকালে আপনার ঠোঁট ফাটে, গায়ে টান ধরে, ঠিক একই কারণে এসিতে ত্বক শুকিয়ে যায়। এসির ঠান্ডা বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ একেবারেই থাকে না। ঠান্ডা ঘরে থাকলে আপনার মেকআপ যে একদম টিপটপ হয়ে যায়, তার কারণ এটাই। বাতাসের অনুকূলে ঘরের শুকনো বাতাস এরপর আপনার ত্বক থেকেও স্বাভাবিক আর্দ্রতা শুষে নিতে শুরু করে। একটানা এসির ঠান্ডা বাতাসে থাকতে থাকতে ত্বকের চারুতা নষ্ট হয়ে গিয়ে হাত পা আর মুখ অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়। শুষ্কতা কমানো না গেলে মুখে অকালে সূক্ষ্ম রেখা দেখা দেয়, দ্রুত বয়সের ছাপ পড়ে গিয়ে মুখ তুলনামূলকভাবে বয়স্ক দেখায়।

সেক্ষেত্রে কিছুক্ষন পর পর এসি চালানো যেতে পারে। একটানা এসি না ব্যবহার করে অল্প সময়ের জন্য এসি ব্যবহার করুন।

ঘরোয়া পদ্ধতি:
জায়গায় একটানা ন’ ঘণ্টার বেশি থাকা উচিত নয়। না হলে ত্বকে সমস্যা দেখা দিতে বাধ্য! ত্বক বিশেষজ্ঞরাও একটানা দু’ তিন ঘণ্টার বেশি এসিতে থাকতে বারণ করেন। বাড়িতে পারতপক্ষে এসি চালাবেন না। খুব গরম লাগলে তবেই এসি চালান।

অফিসে কী করবেন
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের কারণে ত্বকে যা ক্ষতি হয়, তা অফিসের তুলনায় বাড়িতে প্রতিরোধ করা অনেক সহজ। যেহেতু কর্মক্ষেত্রে আপনার দিনের অনেকটা সময় পার করতে হয়, তাতে দীর্ঘমেয়াদিভাবে আপনার ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। যেহেতু অফিসের এসি বন্ধ করা সম্ভব নয়, তাই কিছু টিপস মেনে চলতে পারলে ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কমাতে পারবেন।

অফিসে প্রচুর পানি খান
ত্বক সুস্থ ও সুন্দর রাখতে পর্যাপ্ত পানি খাওয়া জরুরি। এসির ঠান্ডা বাতাসে ত্বক আর চুল, দুইই অসম্ভব শুকনো হয়ে যায়। হারানো আর্দ্রতা পূরণ করার জন্য বেশি করে পানি খেতেই হবে।

ফেনাহীন ক্লেনজ়ার ব্যবহার করুন
সাধারণ ফেসওয়াশের বদলে নিয়ে আসুন ফেনাহীন ক্লেনজ়ার। সাবানযুক্ত ক্লেনজ়ার ত্বকের লোমেরছিদ্র বড়ো করে দেয়, ফলে আর্দ্রতা দ্রুত শুকিয়ে যায়।

ময়েশ্চারাইজ়ার মাখুন
অফিসে ডেস্কের ড্রয়ারে ময়েশ্চারাইজ়ারের বোতল রেখে দিন। প্রতি দু’ঘণ্টা অন্তর গন্ধহীন ময়েশ্চারাইজ়ার ভালো করে মেখে নিন। মুখ ছাড়াও হাত, কনুই, হাঁটু ও পায়ের পাতায় ময়েশ্চারাইজ়ার লাগিয়ে নিতে ভুলবেন না।

ভরসা থাক ফেস মিস্টে
ডেস্কে ময়েশ্চারাইজ়ার ছাড়াও ফেস মিস্ট রেখে দিন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে দু’ তিন ঘণ্টা অন্তর মুখে স্প্রে করে মিনিটখানেক অপেক্ষা করুন। তারপর বাড়তি মিস্ট ব্লটিং বা টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে হালকা করে ময়েশ্চারাইজ়ার বা ফেস সিরাম লাগিয়ে নিলেই ত্বক হয়ে উঠবে তরতাজা!

ডেস্কে রাখুন হিউমিডিফায়ার
মুখে শুষ্কতা কমানোর জন্য ডেস্কে হিউমিডিফায়ার রেখে দিতে পারেন। বিকল্প হিসেবে ফুলদানিতে জল ভরে টাটকা ফুল দিয়ে ডেস্কে রাখুন। ত্বকই নয়, মনও থাকবে তরতাজা!

তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন
ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা যা, এসির তাপমাত্রাও তার কাছাকাছি রাখাই উচিত। আদর্শ তাপমাত্রা হল ২৫-২৭ ডিগ্রি। ঘাম আর তেল নিঃসরণের মাধ্যমে ত্বক বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে অভ্যন্তরীণ আর্দ্রতার মাত্রা বজায় রাখে। ঘরের তাপমাত্রা ২৫-২৭ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে ত্বক বিনা বাধায় কাজ করতে পারে।

এসির হাওয়া সরাসরি গায়ে লাগাবেন না
এয়ার কন্ডিশনারের হাওয়া সরাসরি গায়ে লাগলে শুধু ত্বকের সমস্যাই নয়, শ্বাসকষ্টের সমস্যা, সর্দিকাশি, এমনকী নিউমোনিয়ার মতো কঠিন অসুখ হওয়াও বিচিত্র নয়। সঙ্গে এসির ফিলটার পরিষ্কার করা খুব দরকার।

নিজের যত্ন নিন
সপ্তাহে একদিন অয়েল মাসাজ নিন। মাসাজের ফলে তেল আপনার ত্বকের গভীরে ঢুকে যায় এবং ঠান্ডার রুক্ষতা থেকে আপনাকে সুরক্ষিত রাখে।

সেন্ট্রালাইজ়ড এয়ার কন্ডিশন এড়িয়ে চলুন
যতটা সম্ভব অফিসে বা বাড়িতে সেন্ট্রালাইজ়ড এসি এড়িয়ে চলুন। এসি সেন্ট্রালাইজ়ড না হলে মাঝেমধ্যে বন্ধ করে ঘরের তাপমাত্রা স্বাভািবক হতে দিন। ঘরের এসি বন্ধ করা সম্ভব না হলে বাইরে বেরিয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় হেঁটে আসুন।

What's Your Reaction?
Excited
0
Happy
0
In Love
0
Not Sure
0
Silly
0
View Comments (0)

Leave a Reply

Scroll To Top