করলা তেতো স্বাদযুক্ত। করলা -র হাজার উপকারিতা রয়েছে। আমাদের বাংলাদেশে করলা সাধারনত উছতা, করোল্লা এই নামেই পরিচিত। যে ভাবেই এই সবজির নাম মনে রাখুক, গুণে ও স্বাদে কিন্তু অন্যন্য। তেতো এমন একটা স্বাদ, যা প্রথমবার মুখে দিয়েই কেউ খেতে পারে না। তবে প্রতিদিন করলা থাকলে এ স্বাদের সঙ্গে ক্রমশ অভ্যস্ত হয়ে উঠতে হয়৷ লবন কিংবা মিষ্টি জাতীয় পছন্দ করতে যতটা সময় প্রয়োজন হয়, তেতোর ক্ষেত্রে রয়েছে ভিন্নতা, এটি আয়ত্তে আনতে একটু সময় লাগে৷ তাও আমরা তেতো খাওয়ার উপর এত জোর দিই এর বিবিধ গুণের কারণে৷
বহু হাজার বছর ধরে ভারতীয় রান্নায় করলার ব্যবহার প্রচলিত রয়েছে৷ এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট আর অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল প্রপার্টি আছে৷ নিয়মিত করলা খেলে রক্ত পরিশুদ্ধ থাকে৷ যদি ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে এক গ্লাস করলার রস খেতে পারেন, তা হলে সবচেয়ে বেশি উপকার হবে৷ এই করলার জুস আপনার শরীর থেকে সব টক্সিন বের করতে সাহায্য করবে, তাই ত্বক আর চুল হয়ে উঠবে সুন্দর উজ্জ্বল৷
রলা গাছ কিউকার্বিটেসি অর্থাৎ শশা পরিবারের সদস্য। এটি একবর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ। করলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও সি মেলে, জ়িঙ্ক আর বায়োটিনও থাকে অনেকটাই৷ ফলে আপনার চুল ক্রমশ শক্তিশালী ও মসৃণ হয়ে ওঠে৷ খুশকি কমে যায়, চুলের ডগা ফাটে না আগের মতো৷ করলার রস আর দই মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে চুলে লাগাতে পারেন৷ লেবু আর করলার রসের মিশ্রণও খুব কার্যকর৷ মাইল্ড কোনও শ্যাম্পু দিয়ে আধ ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন৷ যারা বছরের এই সময়টায় মূলত আবহাওয়ার কারণে ব্রণ, চুলকানি বা ফোড়ার সমস্যায় ভোগেন তাঁরাও নিয়মিত করলার রস খেয়ে দেখতে পারেন৷
প্রচুর ভিটামিন এ ও বিটা ক্যারোটিন থাকে বলে করলার রস চোখের জন্য অতি উত্তম বলে সাব্যস্ত হয়৷ ডায়াবেটিস রোগীরা রোজের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই করলা রাখুন, এর পলিপেপটাইড বি আপনার সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে৷ এলার্জি প্রতিরোধে করলার রস দারুণ উপকারি। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও এটি উত্তম ভিটামিন সি বাঁচাবে ত্বকের সমস্যা থেকে৷ বাংলাদেশের আর্য়ুবেদের মতে করলা কৃমিনাশক, পিত্তনাশক ও কফনাশক।
যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাঁরা যত ইচ্ছে করলা খান৷ এর মধ্যে প্রচুর ফাইবার থাকে, কিন্তু কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম বলে ওজন বাড়ার আশঙ্কাও নেই! তবে খুব কড়া করে ছাঁকা তেলে ভাজা করলা খেলে কিন্তু হবে না, সেদ্ধ বা কম তেলে রান্না করে খান৷ ক্ষতস্থানের উপরে পাতার রসের প্রলেপ দিলে এবং উচ্ছে গাছ সেদ্ধ জলদিয়ে ক্ষত ধুলে কয়েকদিনের মধ্যেই ক্ষত শুকিয়ে যায়। অ্যালার্জি হলে এর রস ২চা চামচ সকালে বিকালে খেলে সেরে যাবে। চর্মরোগেও করলা বেশ উপকারী। এছাড়া জন্ডিস ও লিভারের অসুখে খাবারে অরুচি দেখা দিলে করলা খেলে রুচি আসে।
তাই প্রতিদিন আপনার খাবার মেন্যুতে রাখুন করলা।