একান্ত মুহূর্তেও আজকাল ঢুকে পড়েছে সোশাল মিডিয়া

জীবনের প্রতি মুহূর্তে, রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখন সোশাল মিডিয়ার উপস্থিতি। দু’জন মানুষের সম্পর্কে, একান্ত মুহূর্তেও আজকাল ঢুকে পড়েছে সোশাল মিডিয়া। মনস্তত্ত্ববিদ ও রিলেশনশিপ কাউন্সেলরেরাও মেনে নিচ্ছেন সম্পর্কে সোশাল মিডিয়ার এই উপস্থিতি। ব্যক্তিগত মুহূর্ত, কথাবার্তাও হয়ে উঠেছে সোশাল মিডিয়ার বিষয় এবং তার প্রভাব পড়ছে মানসিক স্বাস্থ্যের উপরে। যেমন ধরা যাক, স্বামীর সঙ্গে আপনার যে কোনও মতান্তর, ঝগড়ার কথা তিনি শেয়ার করছেন সোশাল মিডিয়ায়। অর্থাৎ আপনাদের জীবনে কোনও কিছুই আর ব্যক্তিগত থাকছে না। নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের বদলে খোলাখুলি হয়ে যাচ্ছে সব কিছু, আর তারপরেই নানা লোকের উপদেশে উপচে পড়ছে সোশাল মিডিয়ার দেওয়াল, আপনার ইনবক্স। ব্যাপারটা যতটা বিরক্তিকর, ঠিক ততটাই বিব্রত করার মতো।
কী করবেন এমন পরিস্থিতিতে? কিছু সম্ভাব্য সমাধানসূত্র দেওয়ার চেষ্টা করলাম আমরা।
আপনার স্বামী কি অতিরিক্ত সোশাল মিডিয়ায় আসক্ত?
একটু খেয়াল করে দেখুন তো, দিনের অধিকাংশ সময়ই আপনার স্বামী সোশাল মিডিয়ায় ডুবে থাকছেন কিনা! আপনাদের দু’জনের একসঙ্গে সময় কাটানোর পরিমাণ কি ক্রমশ কমে আসছে? প্রতিদিনের ছোট ছোট বিষয়ও কি উনি সোশাল মিডিয়ায় আপডেট করছেন? সে ক্ষেত্রে নিজেদের বিবাহিত জীবনের খুঁটিনাটিও উনি পোস্ট করবেন, এমন সম্ভাবনা ষোলো আনা। ওঁর জীবন যে পুরোটাই সোশাল মিডিয়া কেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে, সেটা ওঁকে শান্তভাবে বোঝানোর চেষ্টা করুন।
প্যাসিভ অ্যাগ্রেশন সামলানোর উপায়
ধরা যাক আপনাদের মধ্যে কোনও বিষয় নিয়ে মতান্তর হল। তার কিছুক্ষণ পর সোশাল মিডিয়ায় লগ ইন করে আপনি দেখলেন বেশ কিছু তির্যক, বিদ্রূপাত্মক মন্তব্য পোস্ট করেছেন আপনার স্বামী। সরাসরি না বলা থাকলেও কারওই বুঝতে অসুবিধে হবে না ওই সব মন্তব্য সোশাল আপনারই বিরুদ্ধে। এই ব্যাপারটাকে মনস্তত্ত্ববিদেরা প্যাসিভ অ্যাগ্রেশন বলেন। ভেবে দেখুন আপনার স্বামীর আচরণেও এই দিকটি প্রকাশ পাচ্ছে কিনা। সে ক্ষেত্রে কাউন্সেলরের সঙ্গে কথা বলা দরকার।
সোশাল মিডিয়া ছাড়বেন না
স্বামীর অদ্ভুত আচরণে অনেক মেয়েই বিব্রত হয়ে নিজেদের সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেট করে দেন। কিন্তু সেটা করবেন না। বরং শান্তভাবে দেখুন উনি কত দূর পর্যন্ত যেতে পারেন। ওঁর সামনে দাঁড়ান, জিজ্ঞেস করুন এমন অদ্ভুত আচরণ করার পিছনে যুক্তি কী! ওঁকে বোঝান এমন আচরণ করে আসলে উনি আপনাদের সম্পর্কটাকেই ঘনিষ্ঠ মহলে হাস্যাস্পদ করে তুলছেন। স্পষ্ট বুঝিয়ে দিন, এমন আচরণ একটা সীমার পর আর আপনি মেনে নেবেন না।
নিজে অনলাইনে লিখুন তবে মাত্রা বুঝে
যদি মনে হয় স্বামীর বক্তব্য খণ্ডন করে নিজেও কিছু লিখবেন, অবশ্যই লিখুন কিন্তু সাবধানে। কখনওই রাগ প্রকাশ করে ফেলবেন না বা আপনি যে আহত হয়েছেন, সেটাও বুঝতে দেবেন না। হালকা চালে নিজের বক্তব্য লিখুন এবং ব্যাপারটা যাতে কোনও মতেই হাতের বাইরে বেরিয়ে না যায়, সেটা দেখুন।