ঋণবরাদ্দে মেটলাইফ বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ কর্মীর সরাসরি অংশগ্রহণ

বিশ্বের স্বল্পআয়ের উদ্যোক্তাদের সহায়তায় আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা কিভার পাশে দাঁড়িয়েছে মেটলাইফ ফাউন্ডেশন। এশিয়াতে কর্মরত মেটলাইফের সহস্রাধিক কর্মী প্রায় ২,৬৩,৩৫০ মার্কিন ডলার মূল্যমানের ক্ষুদ্র ঋণদানে অংশগ্রহণ করেছে। এশিয়ার কোনো কোনো দেশে ‘টেক অ্যাকশন’ প্রচারণার মাধ্যমে মেটলাইফের শতভাগ কর্মী এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করে।
প্রচারণাটি গত মে মাসে ’টেক অ্যাকশন’ নামে এশিয়ার সব মেটলাইফ অফিসে চালু করা হয়। এ অনলাইন ভিত্তিক প্রচারণায় একটি মাত্র ক্লিকের মাধ্যমেই একজন কর্মী বেছে নিয়েছেন ফাউন্ডেশনের দেয়া জনপ্রতি ২৫ ডলারের ক্ষুদ্রঋণ কাকে তিনি দিতে চান। ঋণগ্রহীতারা সেলাই মেশিন ক্রয় বা চাষের বীজ কিনে কৃষিকাজে স্বাবলম্বী হবার মত উদ্যোগে এ অর্থ ব্যয় করতে পারে। এই ঋণের অর্থ দিচ্ছে মেটলাইফ ফাউন্ডেশন এবং উদ্যোক্তাদের নির্বাচন ও ঋণ বন্টনের কাজ করছে কিভা।
নিম্নবর্ণিত ৪টি খাতে মেটলাইফের ১১টি দেশের কর্মীরা ঋণগ্রহীতা নির্বাচনে সাহায্য করেছে।
খাতসমূহ | শতাংশ | বরাদ্দকৃত অর্থ (ডলার) |
নারী | ৩৫.৬% | ৯৩,৮২৫ |
কৃষি | ২৪.২% | ৬৩,৬০০ |
যুবা | ১৭.৬% | ৪৬,৩২৫ |
গ্রিন | ২২.৬% | ৫৯,৬০০ |
কিভা বর্তমানে উপরোক্ত চারটি বিভাগে এ ঋণ বিতরণের কাজে নিয়োজিত আছে। কিভার আওতাধীন ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পরিশোধের হার ৯৬%। তারা আশা করছে মেটলাইফ ফাউন্ডেশনের এ ঋণ অসংখ্য উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনয়নে সহায়তা করবে।
মেটলাইফ ইনকর্পোরেশনের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার এবং এশিয়া অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট স্টিভ গোলার্ট বলেন, “মেটলাইফ ফাউন্ডেশন ও কিভার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে আমাদের কর্মীদের অংশগ্রহণ আবারও প্রমাণ করে যে আমাদের প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ের ভিত্তিতে রয়েছে মানবিক সাহায্যের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। আমাদের এই আয়োজন দশ হাজারেরও বেশি ঋণগ্রহীতাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করবে। এর মাধ্যমে তারা নিজের ও পরিবারের সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে পারবে।”
গোলার্টের সাথে সহমত পোষণ করে মেটলাইফ বাংলাদেশের জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দ হাম্মাদুল করীম বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ৩শ’ ৫৯ জন কর্মীর মধ্যে ৩শ’ ২৩ জন কর্মী এ প্রচারণায় অংশ নিয়েছে, যেটি সত্যই অনন্য। যাদের ৩৪ শতাংশই কৃষি খাতে ঋণ দেয়াকে প্রাধান্য দিয়েছে। কর্মীদের পছন্দের তালিকায় কৃষির পরে ক্রমান্বয়ে স্থান পেয়েছে নারী, সবুজ ও যুবা। তিনি আরো বলেন, “আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, আমাদের কর্মীরা শুধুমাত্র স্থানীয়ভাবে নানান সামাজিক কাজে নিজেদের সীমাবদ্ধ না রেখে দেশের বাইরেও আঞ্চলিক নানা উদ্যোগের ক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে।”
বিশ্বের নানাপ্রান্তের বিভিন্ন উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাত্ম হয়ে মেটলাইফ ফাউন্ডেশন ক্ষুদ্রআয়ের মানুষদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। ২০১৩ সালে, মেটলাইফ ফাউন্ডেশন পাঁচ বছরের জন্য ২শ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদানে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলো। এশিয়াতে মেটলাইফ ফাউন্ডেশন ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক অর্থ অনুদান করেছে যা ২০১৩ সাল থেকে এ অঞ্চলের ৩.৮ মিলিয়ন ক্ষুদ্রআয়ের মানুষদের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিতে অবদান রেখেছে।
যাত্রা শুরুর পর থেকে, কিভা বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্র ঋণে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান প্রদানে সহায়তা করেছে যা বিশ্বব্যাপী ১.৬ মিলিয়ন ঋণদাতা ও ২.৬ মিলিয়ন উদ্যোক্তাকে একইসূত্রে যুক্ত করেছে। এদের মধ্যে আবার ৮১ শতাংশই নারী। কিভা থেকে ঋণগ্রহীতারা ঋণ পরিশোধ করার পর, সেই অর্থ আবার অন্য উদ্যেক্তাদের মাঝে বিতরণ করা হয় যাতে তারাও অর্থিকভাবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
—————-
মেটলাইফ
MetLife Inc. (NYSE: MET), এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠান (“MetLife”) এর সমন্বয়ে বিশ্বের অন্যতম একটি আর্থিক সেবা প্রদানকারী কোম্পানি যা তার ব্যক্তি এবং প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকদের বিমা, এ্যনুইটি, গ্রুপ বিমা ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা সেবা প্রদানের মাধ্যমে পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে সাহায্য করে। ১৮৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত মেটলাইফ বিশ্বের ৪০টির-ও বেশী দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, লাতিন আমেরিকা, এশিয়া, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে নেতৃস্থানীয় অবস্থানে রয়েছে।
১৯৫২ সালে বাংলাদেশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে মেটলাইফের এশিয়া যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে মেটলাইফ বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ জীবনবিমা প্রতিষ্ঠান। প্রায় ১০ দশ লক্ষেরও বেশি গ্রাহকের সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানটি দেশের অন্যতম বৃহৎ নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান যার রয়েছে ১৫ হাজারের বেশি সুদক্ষ কর্মী। বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভিজিট করুন: www.metlife.com.bd
মেটলাইফ ফাউন্ডেশন
মেটলাইফের দীর্ঘদিনের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও উন্নয়নমূলক কাজে অংশগ্রহণের ধারাকে বজায় রাখতে ১৯৭৬ সালে গড়ে তোলা হয় মেটলাইফ ফাউন্ডেশন। শুরু থেকে ২০১৭ সালের শেষ অবধি মেটলাইফ ফাউন্ডেশন ৭৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক অনুদান হিসেবে এবং বিভিন্ন্ প্রতিষ্ঠানে ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে যেন তা সমাজে ইতিবাচক ভ’মিকা রাখতে পারে। বর্তমানে মেটলাইফ ফাউন্ডেশন ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন বিষয়ে কাজ করে চলেছে এবং এ উদ্দ্যেশ্যে বিশ্বব্যাপী সকলের নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে যা ৪২টি দেশে ৩৫ লক্ষ মানুষকে এই সেবার আওতায় আনবে।
কিভা
কিভা একটি আন্তর্জাতিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান যার উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের মাঝে সংযোগের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ। মাত্র ২৫ ডলার ঋনের দানের মাধ্যমে একজন ঋণদাতা একজন ঋণগ্রহীতা ও তাঁর পরিবারের জন্য খুলে দিতে পারেন সম্ভাবনার দুয়ার। সারা বিশ্বের ৮৯০,০০০ জনেরও বেশি ঋণদাতা এবং বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণদানকারি সংস্থা সমূহের সাথে নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে কিভা পৃথিবী জুড়ে ৯৭৫,০০০ জন ঋণগ্রহীতার জন্য আর্থিক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। ২০০৫ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে কিভার ঋণদাতারা এখন পর্যন্ত ৩৯০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করেছে যার পরিশোধের হার ৯৮.৯%।
বিস্তারিত তথ্যের জন্য: www.kiva.org