Now Reading
চুল লম্বার করার কার্যকর গোপন সূত্র

চুল লম্বার করার কার্যকর গোপন সূত্র

Long Hair Formula

কুঁচবরণ কন্যা আর তার মেঘবরণ চুল কি শুধু রূপকথার রাজ্যেই থাকে? র‍্যাপুনজেলের ঝরনার মতো চুল কি নিছক গল্পকথা? বা ধরা যাক ডেলাইলার সেই পিঠ ছাপানো চুল যার জন্য সোনার কাঁকই কিনে এনেছিল তার প্রেমিক? কেমন হয় যদি রূপকথা আর রূপকথা না থাকে? যদি রাপুনজেল আর ডেলাইলার মতো কোমর ছাপানো চুলের মালকিন হতে পারেন আপনিও? চুলের ঠিকঠাক যত্ন নিলে, চুল যথাযথ পুষ্টি পেলে তা ভাঙে ঝরে কম, কাজেই বৃদ্ধিও পায় তাড়াতাড়ি। তাই সবার আগে দরকার চুলের ঠিকমতো যত্নআত্তি করা। কীভাবে চুলের যত্ন নেবেন, কোন কোন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলতে হবে, তারই একাধিক টোটকা রইল এখানে। ঠিকঠাক মেনে চলুন আর দেখুন কীভাবে আপনার একরাশ ঝলমলে উজ্জ্বল চুল কেড়ে নিচ্ছে সবার মুগ্ধ দৃষ্টি!

চুলে শ্যাম্পু করার পদ্ধতি বদলে ফেলুন

জানেন কি, আপনি কত ঘন ঘন শ্যাম্পু করছেন বা কী ধরনের জলে শ্যাম্পু করছেন, তার উপর আপনার চুলের বৃদ্ধি নির্ভর করে? যাঁরা প্রতিদিন শ্যাম্পু করেন তাঁদের চুল অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়। শুষ্কতার কারণে এ ধরনের চুল ভঙ্গুর হয়ে যায়, ফলে ফাটে ঝরেও বেশি। কাজেই চুল কখনওই ঘন বা লম্বা হতে পারে না। চুলকে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করতে সপ্তাহে তিনবারের বেশি শ্যাম্পু করবেন না।

নিয়মিত মাথার ত্বকে মাসাজ করুন
মাথায় মাসাজ একদিকে যেমন অত্যন্ত আরামদায়ক, তেমনি চুলের স্বাস্থ্যের পক্ষেও দারুণ উপকারী। কাজের ফাঁকে মাঝেমধ্যে নিজেই সেরে নিতে পারেন চটজলদি মাসাজ। চুলের গোড়ায় আঙুল চালালে মাথায় রক্তসঞ্চালন বাড়বে, চুলের ফলিকলে পুষ্টিও পৌঁছে যাবে সহজেই। একদিন অন্তর ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে মাসাজ করতে পারেন। চুলের বৃদ্ধিতে দারুণ কাজে দেয় ল্যাভেন্ডার অয়েল। শুধু শুকনো মাথাতেই নয়, স্নানের সময় ভেজা চুলেও পিছন থেকে সামনে ভালো করে মাসাজ করুন।

মাসে দু’বার হট অয়েল ট্রিটমেন্ট
চুলের গোড়ায় গোড়ায় তেলের পুষ্টি পৌঁছে দেওয়ার জন্য মাসে দু’বার অয়েল মাসাজ করতেই হবে। নারকেল তেল হালকা গরম করে চুলের গোড়ায় গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে নিন। এরপর একটা বড়ো তোয়ালে কুসুমগরম জলে ডুবিয়ে ভালো করে নিংড়ে চুলে জড়িয়ে রাখুন, যতক্ষণ না তোয়ালে ঠান্ডা হয়ে যায়। এর পর শ্যাম্পু করে নিন। চুলের গোড়ায় জমে থাকা তেলময়লা বের করে এনে চুল সুন্দর করে তুলতে হট অয়েল ট্রিটমেন্ট দারুণ কার্যকরী।

চুলের গোড়ায় গোড়ায় তেলের পুষ্টি পৌঁছে দেওয়ার জন্য মাসে দু’বার অয়েল মাসাজ করতেই হবে। নারকেল তেল হালকা গরম করে চুলের গোড়ায় গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে নিন। এরপর একটা বড়ো তোয়ালে কুসুমগরম জলে ডুবিয়ে ভালো করে নিংড়ে চুলে জড়িয়ে রাখুন, যতক্ষণ না তোয়ালে ঠান্ডা হয়ে যায়। এর পর শ্যাম্পু করে নিন। চুলের গোড়ায় জমে থাকা তেলময়লা বের করে এনে চুল সুন্দর করে তুলতে হট অয়েল ট্রিটমেন্ট দারুণ কার্যকরী।

ভেজা চুলে বাড়তি যত্ন
চুল ভেজা অবস্থায় বেশি ঘষে ঘষে মুছবেন না, আঁচড়াবেনও না। ভেজা অবস্থায় চুল দুর্বল থাকে। ফলে দ্রুত মোছা বা আঁচড়ানোর ফলে চুল ভেঙে যেতে পারে। তোয়ালে দিয়ে হালকা হাতে চুল মুছুন, তারপর পাখার হাওয়ায় বা প্রাকৃতিক বাতাসে শুকিয়ে নিন।

কন্ডিশনার ব্যবহার করুন

শ্যাম্পু চুলের স্বাভাবিক তেলাভাব আর আর্দ্রতা শুষে নেয়। হারানো আর্দ্রতা ফিরিয়ে এনে চুল মসৃণ আর উজ্জ্বল করে তোলে কন্ডিশনার। তাই প্রতিবার শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনার লাগাতে কখনওই ভুলবেন না।

ঠান্ডা জলে হাল ফিরবে চুলের

গরম জল চুলের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। শ্যাম্পু আর কন্ডিশনিং হয়ে যাওয়ার পর বালতি বা গামলায় ঠান্ডা জল নিয়ে তাতে কিছুক্ষণ চুল ভিজিয়ে রাখুন। এতে চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকবে, চুলের কিউটিকলও মজবুত হবে। গরম জল চুলের কাঠামো একদম নষ্ট করে দেয়, তাই চুল ধোওয়ার সময়ও ঠান্ডা জলই ব্যবহার করুন।

নিয়মিত চুল ছেঁটে রাখুন
যাঁরা লম্বা চুল পেতে চান, তাঁরা সচরাচর কাঁচির ধারপাশ মাড়ান না। কিন্তু সত্যি বলতে, তিন মাস অন্তর চুল ছেঁটে ফেললে চুল বাড়ে ভালো। ডগা ফাটার সমস্যা যাঁদের আছে, তাঁদের তো অবশ্যই নিয়মিত চুল ছেঁটে ফেলতে হবে। সত্যি বলুন, খড়ের মতো বিবর্ণ চুল আপনি কি চান? তার চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ বাদ দিয়ে দিন, চুল সুন্দর থাকবে, লম্বাও হবে দ্রুত।

নিয়মিত চুল ছেঁটে রাখুন
যাঁরা লম্বা চুল পেতে চান, তাঁরা সচরাচর কাঁচির ধারপাশ মাড়ান না। কিন্তু সত্যি বলতে, তিন মাস অন্তর চুল ছেঁটে ফেললে চুল বাড়ে ভালো। ডগা ফাটার সমস্যা যাঁদের আছে, তাঁদের তো অবশ্যই নিয়মিত চুল ছেঁটে ফেলতে হবে। সত্যি বলুন, খড়ের মতো বিবর্ণ চুল আপনি কি চান? তার চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ বাদ দিয়ে দিন, চুল সুন্দর থাকবে, লম্বাও হবে দ্রুত।


কেমিকাল থেকে দূরে থাকুন

অতিরিক্ত স্টাইলিং প্রডাক্টের ব্যবহার চুলের ক্ষতি করে। তাই ঘন ঘন চুলে রং, হেয়ার ল্যাকার বা অন্য কোনও কৃত্রিম রাসায়নিক জিনিস লাগাবেন না। এমনকী, আপনার শ্যাম্পু বা কন্ডিশনারেও যদি কেমিকালের পরিমাণ বেশি থাকে, চুল খারাপ হয়ে যাবে। সাধারণ বাজারচলতি শ্যাম্পু বা কন্ডিশনারে সালফেটের পরিমাণ খুব বেশি থাকে। সালফেট চুলের স্বাভাবিক তেলাভাব নষ্ট করে চুল রুক্ষ আর বিবর্ণ করে দেয়। অন্যদিকে কন্ডিশনারের সিলিকোন চুলের উপর একটা আবরণ তৈরি করে, যার ফলে চুল নির্জীব দেখায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার। কেনার আগে লেবেলে উপাদানগুলোয় সালফেট বা সিলিকোনের পার্সেন্টেজ দেখে তবেই কিনবেন। অর্গানিক প্রডাক্ট কিনতে পারলে সমস্যা অনেকটাই এড়ানো যাবে।


অতিরিক্ত স্টাইলিং নয়
কথায় কথায় চুলের স্টাইলিং বদলানোর বাতিক আছে আপনার? লম্বা চুল পাওয়ার আশা কিন্তু ওখানেই শেষ হয়ে গেল! ঘন ঘন হেয়ার স্ট্রেটনিং, কার্লিং, পার্মিং করতে গিয়ে চুলে যে পরিমাণ তাপ দিতে হয়, তাতে মারাত্মক ক্ষতি হয়। গরম জলে চুল ধুলে চুলের যা ক্ষতি, এ ক্ষেত্রেও তার বেশি ছাড়া কম নয়। অতিরিক্ত তাপে চুলের গঠনতন্ত্র সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়ে চুল উঠে যায়, মাঝখান থেকে ভেঙেও যায়। এমনকী, নিয়মিত হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করলেও চুলের ক্ষতি হয়। ঘন ঘন স্টাইলিং করবেন না, করার আগে অবশ্যই হিট প্রোটেকট্যান্ট প্রডাক্ট লাগিয়ে নিন। রোজ রোজ ড্রায়ার ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক হাওয়ায় চুল শুকোন। চুল মজবুত থাকলে বাড়বেও তাড়াতাড়ি।

নিয়মিত হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করুন
হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রতা ফিরিয়ে এনে চুল সজীব আর সুন্দর করে তুলতে জুড়ি নেই হেয়ার মাস্কের। প্রতি দু’সপ্তাহ অন্তর তাই আপনার চুলকে দিন হেয়ার মাস্কের যত্ন। বাজারচলতি মাস্ক ব্যবহার করতে ইচ্ছে না করলে রান্নাঘরের টুকিটাকি দিয়ে নিজেই তৈরি করে নিতে পারেন আপনার এক্সক্লুসিভ হেয়ার মাস্ক। দই, মধু আর ডিমের কুসুম একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে চুলে লাগালে চুলের মসৃণতা বাড়বে। রুক্ষ, জটপাকানো চুলের সমস্যা থাকলে ব্যবহার করতে পারেন আভোকাডো আর কলার মাস্ক। আর ঝলমলে ঘন চুলের জন্য রয়েছে ডিম, বিয়ার ক্যাস্টর অয়েল ও মধুর মাস্ক। এই প্রতিটি মাস্কই বাড়িতে সহজেই তৈরি করে নেওয়া যায় এবং নিয়মিত ব্যবহারে চুলের স্বাস্থ্য ফিরে চুল লম্বাও হয় ঝটপট।


পুষ্টিকর খাবার খান

আপনার শরীর পর্যাপ্ত প্রোটিন না পেলে কিন্তু চুল কিছুতেই মজবুত হবে না। আর চুল মজবুত না হলে ঘন, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, লম্বা চুল নেহাত স্বপ্নই থেকে যাবে। প্রতিদিনের খাবারে আমিষ রাখুন। ডিম বা চিজ়ও চুলের পক্ষে ভালো। যদি আপনি নিরামিষাশী হন, তা হলে প্রতিদিন বিন, ডালজাতীয় খাবার, পালংশাক, দুধ খেতেই হবে। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াও খুব দরকার। তৈলাক্ত মাছ, আভোকাডো, বাদাম, তিসির তেল থেকে ওমেগা থ্রি পাবেন। সিস্টেম পরিষ্কার রাখতে খাবারের পাশাপাশি প্রচুর জলও খেতে হবে।


সঠিক সাপ্লিমেন্ট খান
চুলের স্বাস্থ্যরক্ষায় পুষ্টির ভূমিকাকে বাদ দেওয়া যাবে না কোনওমতেই। প্রতিদিনের খাবার থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি আপনি নাও পেতে পারেন। তাই দরকারমতো সাপ্লিমেন্ট দিয়ে সেই ঘাটতি পূরণ করতেই হবে। অ্যান্টি-অক্সিডান্ট আর ভিটামিন বি আপনার চুল মজবুত করে। বায়োটিনের মতো সাপ্লিমেন্টও চুল বাড়িয়ে তুলতে অব্যর্থ কাজ করে। বাড়তি ওমেগা থ্রি পেতে ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্টও খেতে পারেন।

দরকার পর্যাপ্ত বিশ্রাম
অতিরিক্ত স্ট্রেস আর ঘুমের অভাব চুলের স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধির পক্ষে ক্ষতিকর৷ আপনি যখন ঘুমোন, আপনার চুল তখন সারাদিনের ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে ধীরে ধীরে তরতাজা হয়ে ওঠে৷ তাই দিনে অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমোনোর চেষ্টা করুন৷

দরকার পর্যাপ্ত বিশ্রাম
অতিরিক্ত স্ট্রেস আর ঘুমের অভাব চুলের স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধির পক্ষে ক্ষতিকর৷ আপনি যখন ঘুমোন, আপনার চুল তখন সারাদিনের ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে ধীরে ধীরে তরতাজা হয়ে ওঠে৷ তাই দিনে অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমোনোর চেষ্টা করুন৷

What's Your Reaction?
Excited
0
Happy
0
In Love
0
Not Sure
0
Silly
0
View Comments (0)

Leave a Reply

Scroll To Top