ইংরেজি সাহিত্য মানে শেক্সপিয়ারের লেখা মোটা মোটা বই পড়া নয় শুধু। ইংরেজি সাহিত্য পড়ার মাধ্যমে শুধু ইংরেজি নয়, আরও অনেক জাতির সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবেন। আপনি যদি ঠিক করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি, বিশেষ করে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়তে, তাহলে আপনার শুধু ইংরেজিতে লেখার এবং কথা বলার দক্ষতা বাড়বে তাই না, আপনার যেকোন বিতর্কে নিজের অবস্থান সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা, কোন ঘটনা সুন্দরভাবে বর্ণনা করা, এবং যেকোন বিষয় বিভিন্ন দিক এবং অবস্থান থেকে বিশ্লেষণ করার দক্ষতাও বাড়বে।
যেহেতু ইংরেজি আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে পরিচিত, তাই মোটামুটি পৃথিবীর সকল ভাষার সাহিত্যেরই ইংরেজি অনুবাদ সহজে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বলা যায় যে, বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত সব কাজের মানসম্পন্ন অনুবাদ যদি করা সম্ভব হয়, তবে বিশ্বের দরবারে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সম্মান অনেক বেড়ে যাবে। এখন কথা হচ্ছে সাহিত্য নিয়েই বা উচ্চশিক্ষা নেবেন কেন।
এটি করবেন মূলত আপনার আত্মার উন্নতি সাধন করতে। বর্তমান যুগে ক্যারিয়ার দৌড়ে সবাই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ভরতে ব্যস্ত। এদিকে মন যে খালি পড়ে রয়েছে সেদিকে কারো খেয়াল নেই। সাহিত্যে পড়াশোনা করার মাধ্যমে আপনার আত্মিক উন্নতি হবে, মন সঙ্কীর্ণতা থেকে মুক্তি পাবে।
হয়তো অনেকে বলবেন, এমনি নিজে বই পড়লেই হয়, সাহিত্য নিয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে হবে কেন। কারণ এমনিতে পড়লে বই থেকে শুধু আনন্দ লাভ করবেন, শিক্ষাটি পুরোপুরি গ্রহণ করতে পারবেন না।
আরেকটা সন্দেহ আসে যে সাহিত্য নিয়ে পড়লে চাকরির বাজার সীমিত হয়ে পড়ে, কিন্তু এটা ঠিক নয়। ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক অর্জনের পর অনেক কিছুই করতে পারেন আপনি। যেমনঃ
প্রথমেই আসে শিক্ষকতার কথা। আপনি যদি গবেষণায় আগ্রহী হন, এবঙ আপনার রেজাল্ট ভাল হয়, আপনার বিশ্ববিদ্যালয়েই হয়তো লেকচারার হিসেবে যোগদান করতে পারেন। এছাড়াও স্কুলগুলোতে ইংরেজি শিক্ষকের যথেষ্ট চাহিদাও রয়েছে।
শিক্ষকতা ভাল না লাগলে আপনি সাংবাদিকতায়ও ঢুকতে পারেন। যেহেতু আপনি সাহিত্যের ছাত্র, আপনার লেখার হাত স্বাভাবিকভাবেই ভাল। আপনি সহজেই যেকোন বাংলা বা ইংরেজি দৈনিকে সাংবাদিক হিসেবে চাকরি পাবেন। আবার আপনার বাচনভঙ্গি সুন্দর হলে টিভি সাংবাদিক হিসেবে যোগ দিতে পারেন।
যেহেতু মিডিয়ার কথা আসল, আপনি ইংরেজিতে অনার্স করার পর অ্যাডভার্টাইজিং ফার্মগুলোতে কন্টেন্ট রাইটার হিসেবেও কাজ করতে পারেন। অ্যাডভার্টাইজিং ফার্মগুলোয় আপনি মার্কেটিং বা পাবলিক রিলেশান্স বিভাগেও সহজেই কাজ পেতে পারেন, যদি আপনার এদিকে কাজ করার আগ্রহ থাকে।
কর্পোরেটেও যাওয়া সম্ভব ইংরেজি সাহিত্যের ডিগ্রি নিয়ে। ইংরেজি সাহিত্য থেকে যারা কর্পোরেটে যান, তারা সাধারণত মানবসম্পদ বিভাগে কাজ করেন। চাইলে আপনি প্রোডাকশান, ফিন্যান্স, মার্কেটিং বিভাগেও কাজ করতে পারেন, কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনার উচিত হবে ১টি এমবিএ ডিগ্রি নিয়ে নেয়া, যাতে তাড়াতাড়ি কাজ শিখতে পারেন।
কাজেই নিজের মনমানসিকতার পরিচর্চা ও পৃথিবীর বিভিন্ন জাতির সম্পর্কে জ্ঞান বাড়াতে চাইলে ইংরেজি সাহিত্যে উচ্চশিক্ষা অর্জন করুন। আর আপনি যদি অন্য বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই যান, তবে আপনার জুনিয়রদের পরামর্শ দিন ইংরেজি সাহিত্যে নিয়ে পড়ার। আর যাই হোক ভবিষ্যতে পস্তাবেন না নিশ্চিত থাকুন।