শিশুকে ভালো স্পর্শ, মন্দ স্পর্শ সম্পর্কে সচেতন করুন

শিশুকে স্নেহ করা বা স্পর্শ করে আদর করা প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক আচরণ। কিন্তু শৈশব বা কৈশোরের কিছু কিছু অস্বাভাবিক ও অনাকাঙ্খিত স্পর্শ শিশুটির মানুষিক গঠনে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে গভীরভাবে। যা তার পরবর্তী জীবনে ভয়ঙ্কর প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হয়। আধুনিক যুগে সচেতন অভিভাবক হিসেবে সন্তানদের ভালো স্পর্শ মন্দ স্পর্শ সম্পর্কে সচেতন করা আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক কর্তব্য। ফলে হঠাৎ অনাকাঙ্খিত স্পর্শের সম্মুখীন হলে শিশু নিজেই যেন প্রতিরোধ করতে পারে।
কিভাবে শেখাবো
যৌন নির্যাতনের শিকার উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত সকল শ্রেণী ও সব বয়সী শিশুরাই পারে। শুধুমাত্র মেয়ে শিশুরা নয় ছেলে শিশুরাও যৌন নির্যাতনের সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আপনার শিশুকে তার শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ সম্পর্কে ধারণা দিন এবং অঙ্গের নাম শেখান। ধারণা দিন তার শরীরের সীমানা ও তার একান্ত ব্যাক্তিগত অঙ্গগুলোর সম্পর্কে। পাশাপাশি আরো শেখান যে তার শরীর একান্তই ব্যাক্তিগত এবং এর উপর শুধুমাত্র তার অধিকার। কোনো পরিচিত বা অপরিচিত ব্যাক্তির অনাকাঙ্খিত স্পর্শকে সে না বলার অধিকার রাখে।
কোন বয়সে শিখবে
অনেকে ভাবেন যে শিশু কোন বয়সে শিশুকে এসব শেখানো উচিত। তবে এ ব্যাপারে যে বয়স থেকে শিশু বোঝে ও কথা বলতে শেখে তখনই এ ব্যাপারে শিশুকে ধারণা দিন। যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে অভিভাবক ও শিশুর নিজের সচেতনতাই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধক। সবার আগে অবশ্যই শিশুর সাথে অভিভাবকের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। নতুবা শিশু তার কোনো গোপন বা স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নির্দ্বিধায় প্রকাশ করতে চাইবে না বা ভয় পাবে। শিশুদের দ্বিধা, অভিযোগ এবং গোপন বিষয়গুলোকে উপেক্ষা না করে গুরুত্ব দিন। কোনো পরিচিত কাছের মানুষ সম্পর্কে অভিযোগ করলে বকা না দিয়ে বিশ্বাস করুন। আপনি যে আপনার শিশুর সবচেয়ে নিরাপদ ও আস্থার স্থান তা নিশ্চিত করুন। শিশু বয়সের যৌন নির্যাতনের ফলে অনেক মারাত্মক ও দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক এবং মানসিক প্রভাব ফেলে যেমন মানুষের প্রতি অবিশ্বাস ও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি, দাম্পত্য ও যৌন সম্পর্কে সমস্যা এবং বিবিধ মানসিক সমস্যা।
যৌন নির্যাতনের ভয়ে শিশুদের বাইরে খেলাধুলা বা সামাজিক যোগাযোগ বন্ধ করা যাবে না। কারণ পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশে খেলাধুলা এবং সামাজিক মেলামেশা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং প্রতিটি মা বাবাকে তার সন্তানকে ভালো ও মন্দ স্পর্শ সম্পর্কে গুরুত্ব নিয়ে শেখাতে হবে।