ক্যারিয়ার গঠনে আন্দাজে ঢিল ছুড়ে মারার প্রবণতাটি আমাদের সমাজে প্রবল। চাকরির ইন্টারভিউ দিয়ে যেখানে চান্স পেয়ে যাই সেটাকেই আমরা ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিই। তার ফলে যা হয়, বেছে নেওয়া কাজটির ব্যাপারে আমাদের কোনো আগ্রহ বা উত্তেজনা থাকেনা। কেবলমাত্র মাসশেষে বেতন পাওয়ার উৎসাহে আমরা কাজ করে যাই। যার ফলে কাজের মধ্যে কোনো ইনোভেশান থাকেনা, কাজে একঘেয়েমি চলে আসে। কিন্তু আপনি যদি আপনার কাজকে পছন্দই না করেন, সেটি নিয়ে ক্যারিয়ার গড়ে তোলা ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথটি হয়ে উঠবে অত্যন্ত কঠিন।
এছাড়া আরও একটি প্রবণতাও আমাদের মধ্যে লক্ষ্যনীয়। সেটি হচ্ছে আমরা মানুষের কথা শুনে নিজের ক্যারিয়ার বেছে নিই। নিজের পছন্দের চেয়ে সমাজের সবার কাছে যেটি গ্রহনযোগ্য সেটিকে অগ্রাধিকার দেই। যার ফলে দেখা যায় কাজ করতে গিয়ে সেটি আর ভালো লাগছেনা।
অনেকটা শিক্ষাক্ষেত্রে সাব্জেক্ট বেছে নেওয়ার মতো। অংকে কাচা একজন শিক্ষার্থী আশেপাশের মানুষের কথা এবং নিজের পরিবারের চাপে হয়ত ইন্জিনিয়ারিং সাব্জেক্ট বেছে নিয়েছে, কিন্তু সেখানে তার সফল হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
তাই ক্যারিয়ার হিসেবে প্রাধান্য দিতে হবে আপনার পছন্দের কাজটিকে।যেটি করে আপনি আনন্দ পাচ্ছেন। তবে শুধু আনন্দ পেলেই হবেনা। দেখতে হবে আপনার পছন্দের কাজটিতে আপনি কতোটা দক্ষ। কর্মক্ষেত্রে আপনার দক্ষতা ও পছন্দের সমন্বয় করতে পারলেই আপনি ক্যারিয়ার গঠনে সফল হতে পারবেন।
পছন্দের ক্যারিয়ারে সফল হওয়ার কিছু টিপস :
১) সবার প্রথমে আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে আপনার পছন্দের জায়গাটি। কোন কাজটি করতে আপনি আনন্দ ও উৎসাহ পাচ্ছেন। ঠান্ডা মাথায় বসে চিন্তা করে খুঁজে বের করুন পছন্দের জায়গাগুলি এবং সেগুলো নিয়ে রিসার্চ করুন।
২) এরপর আপনাকে দেখতে হবে আপনার পছন্দের কাজটিতে আপনি কতটুকু দক্ষ। আপনি যেই কাজটি করতে পছন্দ করেন সেটিতে যদি আপনার দক্ষতা ভালো থাকে তাহলে তা আপনার কর্মক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। কাজের প্রতি আপনার আগ্রহও বাড়াবে।
৩) যদি আপনার পছন্দের কাজটিতে আপনার দক্ষতা কম থাকে, তাহলে পিছিয়ে যাওয়ার কোনো কারন নেই। বিষয়টিকে নিয়ে রিসার্চ করুন, পড়াশুনা করুন। দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্র্যাকটিস করুন। পছন্দের বিষয়টি নিয়ে নাড়াচাড়া করতে আমাদের সবারই ভালো লাগে। এতে করে আপনি নতুন নতুন আইডিয়াও পাবেন এবং ক্যারিয়ার হিসেবে কাজটির চাহিদা কেমন সেই সম্পর্কেও ধারনা হবে।
৪) আপনি যেই কাজটি পছন্দ করেন, এবং একই সাথে আপনার দক্ষতাও আছে সেটির যদি কোনো চাহিদা না থাকে তাহলে আপনার পরিশ্রমটুকুই বৃথা। তাই আপনাকে অবশ্যই কার্যক্ষেত্রে যাওয়ার আগে কাজের চাহিদাও বিবেচনা করতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনার আইডিয়াটিকে মানুষের চাহিদার মধ্যে কিভাবে আনা যায় সে বিষয়ে রিসার্চ করুন।
৫) সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। নিজের পছন্দে ক্যারিয়ার গঠনে অনেক বাধা আসলেও ধৈর্য্যের সাথে সকল বাধা অতিক্রম করার মনোবল থাকতে হবে।
স্যার আবদুল্লাহ্ আবু সায়ীদ একবার বলেছিলেন, “মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়।” আপনার স্বপ্নটিকে বাস্তব রূপ দিয়ে ক্যারিয়ার হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে সফলতা অর্জনে আপনাকে কেউ ঠেকাতে পারবেনা। তাই যে কাজেই ক্যারিয়ার করুন না কেন সেটি যেন অবশ্যই আপনার পছন্দসই হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আর নিজের পছন্দের চাকরিটি বেছে নিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করার প্রথম পদক্ষেপ সিভি তৈরীর পদ্ধতিটি জানতে হলে ক্লিক করুন এই লিংকটিতে।