সিভি তৈরি-চাকরির ক্ষেত্রে সফল পদক্ষেপ!

আপনার প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা শেষ? এবার তাহলে নিশ্চয়ই একটা চাকরি দরকার। চাকরিক্ষেত্রে এসেই আমাদের সবার একটাই প্রশ্ন, How to build my CV? গবেষণায় দেখা গেছে হাজার হাজার কিংবা শত শত প্রার্থীর মধ্য থেকে উপযুক্ত প্রার্থীদের খুঁজে নিতে চাকরিদাতাদের ৩০ সেকেন্ডেরও কম সময় ব্যয় হয়। তাহলে আপনার CV টি কিভাবে সহজেই ‘না’ এর তালিকা থেকে আলাদা করে ‘হ্যাঁ’ এর তালিকায় আনবেন?
১. বাছাইকারী কর্মকর্তাদের প্রথম দর্শনেই তা যেন আকর্ষনীয় মনে হয়।
২. সংযুক্ত ছবিটি যেন অবশ্যই আনুষ্ঠানিক এবং সদ্যতোলা হয়।
৩. গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ যেন অন্যান্য গুলো থেকে আলাদা করে নজরে পড়ে।
CV তৈরির ধাপ
১. সদ্যতোলা ছবি (Photograph)
আমাদের মধ্যে অনেকেই একটা সাধারণ কাজ করে থাকি-কোথাও পাসপোর্ট সাইজের ছবি জমা দেয়া লাগলেই কোনো একসময়ে তোলা অনেক পুরাতন একটা ছবি থেকে নতুন ছবি করে নিয়ে জমা দিয়ে দেই। চাকরির ক্ষেত্রে কখনোই এমন করা যাবে না। অবশ্যই সেটা ফর্মাল এবং সদ্যতোলা হতে হবে। আবার কম্পিউটার দোকানে ফটোশপের কাজ করে কোট টাই বসিয়ে ছবি দিলেই তা ফর্মাল হয়ে যাবে না এ ব্যাপারটাও মাথায় রাখতে হবে।
২. ব্যাক্তিগত তথ্য (Personal Information)
এখানে থাকবে নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, ঠিকানা, যোগাযোগের জন্য ফোন নাম্বার, ই-মেইল, বর্তমান পেশা, ধর্ম ইত্যাদি।
৩. পেশাগত উদ্দেশ্য (Career Objectives)
এ অংশে আপনার পরিচয় সংক্ষেপে তুলে ধরুন। আপনার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য, পেশাগত জীবনে আপনি কি ধরণের দক্ষতা দেখাবেন এসব সংক্ষেপে উল্লেখ করুন। খেয়াল রাখবেন যেন তা বেশি ছোট না হয় তাহলে মনে হবে আপনি অন্য-জায়গা থেকে কপি পেস্ট করেছেন।
৪. শিক্ষাগত যোগ্যতা (Education)
আবেদনকৃত চাকরির ধরণ অনুযায়ী এর গুরুত্ব পরিবর্তনশীল। সরকারি চাকরি আর খুব নামি-দামি কিছু প্রতিষ্ঠান ছাড়া আপনার GPA এখন আর তেমন গুরুত্ব বহন করে না। তবে আপনি কোথায় পড়াশোনা করেছেন এটা কিছুটা গুরুত্বপূর্ণ।
৫. অভিজ্ঞতা ও অর্জন (Experience and Achievements)
আপনার ইণ্টার্ণশীপ, কোনো মেধাবৃত্তি, পূর্ববর্তী কাজের কোনো অভিজ্ঞতা যদি থাকে তার বিস্তারিত এ অংশে উল্লেখ করতে হবে।
৬. কার্যদক্ষতা (Skills)
পূর্ববর্তী কোনো প্রশিক্ষণ বা কর্মশালা করে থাকলে তার নাম, এছাড়া বিভিন্ন কাজে নিজস্ব দক্ষতা যেমন, বিতর্ক, অন্য ভাষায় পারদর্শিতা। কোনো সফটওয়্যার বা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে পারদর্শিতা যদি থাকে তা এ অংশে যুক্ত করা যেতে পারে। তবে মাথায় রাখতে হবে সাঁতার, সাইক্লিং, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, ই-মেইল করার বেসিক কাজ গুলোর উল্লেখ করা উচিত নয়। কারণ এগুলো না পারলে তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে তাকে সম্পূর্ণ অজ্ঞ বলে ধরে নেয়া হয়। তাই এসব কোনো দক্ষতার পর্যায়ে পড়ে না এখন আর।
৭. আগ্রহ ও অন্যান্য (Interest & Additional)
এ অংশটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। এটি সাধারণত দেয়া হয় যাতে চাকরিদাতা আপনার পছন্দ অপছন্দ থেকে আপনার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে একটি ধারণা অর্জন করতে পারেন।
চাকরিজীবনে প্রবেশের আগেই কিন্তু আপনাকে আপনার ক্যারিয়ার নির্ধারণ করতে হবে। আপনার ক্যারিয়ার গড়তে বেছে নিন নিজস্ব পছন্দ। সে অনুযায়ী আপনার কাঙ্ক্ষিত চাকরির ধরণ এবং CV-র ধরণেও পার্থক্য হবে।
যেসকল পদ্ধতি ব্যবহার করে তৈরি করতে পারেন আপনার জীবনবৃত্তান্ত
১. Microsoft Office Word ব্যবহার করে।
২. Microsoft Excel এর মাধ্যমে।
৩. Microsoft Powerpoint tool ব্যবহার করে।
৪. Adobe Illustrator Software দিয়ে।
এছাড়াও বিভিন্ন Android Software এর মাধ্যমেও default CV design করা সম্ভব। CV builder নামক একটি ফ্রি সফটওয়্যার ব্যবহার করে খুব সহজেই স্ট্যান্ডার্ড ফরমেটে Resume বানানো সম্ভব। তবে মনে রাখবেন যেকোনো কাজে সৃজনশীলতাই আপনাকে অন্যান্যদের থেকে আলাদা করে তুলে ধরবে। তাই ফ্রি এপস ব্যবহার না করে নিজেই ডিজাইন করার চেষ্টা করুন।
তবে আর দেরি কেন? এখনই প্রস্তুত করে ফেলুন আপনার অসাধারণ একটি CV আর কেরিয়ার উন্নতির পথে আরও একধাপ এগিয়ে যান।
What's Your Reaction?
আমি সরকারি গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট এ কম্পিউটার টেকনোলজি নিয়ে পড়াশোনা করছি। আবৃত্তি সংসদ, ঢাকার সাথে আছি কবিতার রাজ্যে। এবং কৌতূহলের চাকায় চড়ে জগৎ জুড়ে বেড়াই ঘুরে!