Now Reading
আংটি দেখে চিনলেন বাবা পুড়ে অঙ্গার একমাত্র সন্তান মিথিকে

আংটি দেখে চিনলেন বাবা পুড়ে অঙ্গার একমাত্র সন্তান মিথিকে

তখনো মিথির লাশ এসে পৌঁছেনি তাঁর গ্রামের বাড়ি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের বশিপুর গ্রামে। শুক্রবার সকাল থেকে মিথিদের বাড়িতে চলছে স্বজনদের আহাজারি আর বুকফাটা আর্তনাদ। বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন মিথির মা। বাবা মাসুদুর রহমান মেয়ের লাশ নিতে গিয়েছিলেন ঢাকায়। বেলা ১১টায় মিথির লাশ বহনকারী গাড়িটি বশিপুর গ্রামে এলে সেখানে শুরু হয় মাতম।

রাজধানীর বনানীতে এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আইনজীবী মাসুদুর রহমানের একমাত্র সন্তান তানজিলা মৌলি মিথি (২৪) আগুনে পুড়ে মারা গেছেন। মিথি রাজধানীর মিরপুরে একটি বাসায় স্বামীকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন। আগামী ২ এপ্রিল সান্তাহারে এসে বাবা-মায়ের বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করার কথা ছিল মিথির। কিন্তু সেই ইচ্ছাটা আর পূরণ হলো না তাঁর। এফআর টাওয়ারে লাগা ভয়াবহ আগুন মিথির দেহকে অঙ্গার করে দিয়েছে। সঙ্গে পুড়িয়েছে তাঁর স্বপ্ন।

মিথির চাচা সালাউদ্দিন সরদার বলেন, ‘ঢাকায় একটি ট্যুরিজম কোম্পানিতে চাকরি করতেন মিথি। এভাবে মিথির চলে যাওয়াটা কেউ মেনে নিতে পারছেন না।’

আগুনে আটকা পড়ার পর মিথি তাঁর বাবা ও স্বামীকে মোবাইলে বলেছিলেন, ‘আমাদের অফিসে আগুন লেগেছে, আমি আগুনে আটকা পড়ে আছি। আমাকে বাঁচাও, আমি বাঁচতে চাই।’ মেয়েকে বাঁচাতে বাবা মাসুদুর রহমান দিশেহারা হয়ে বগুড়ার সান্তাহার থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। ঢাকায় আসার পর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে তিনি দেখেন মেয়ের আগুনে পোড়া নিথর দেহ। ভোটার আইডি কার্ড ও হাতের আংটি দেখে মেয়ের লাশ শনাক্ত করেন বাবা।  ঢাকার মিরপুরে মিথির প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার বাদ জুমা বগুড়ার সান্তাহারে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

মিথির বিয়ে হয় মাত্র আট মাস আগে। স্বামী রায়হানুল ইসলাম রিমন চাকরি করেন ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসে। মিথি নিজেও চাকরি করতেন ট্যুরিস্ট অ্যান্ড হেরিটেজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে। এফআর টাওয়ারের দশম তলায় ছিল মিথির অফিস। তানজিলা মৌলি মিথি চাকরির পাশাপাশি ঢাকায় বেসরকারি এশিয়ান ইউনিভার্সিটির বিবিএ ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

What's Your Reaction?
Excited
0
Happy
0
In Love
0
Not Sure
0
Silly
0
View Comments (0)

Leave a Reply

Scroll To Top