থাই এয়ারওয়েজ এর বৈষম্যের স্বীকার বাংলাদেশীরা

ব্যবসা, চিকিৎসা, ভ্রমণ সহ ইত্যাদি কাজে বাংলাদেশের অনেক মানুষই থাইল্যান্ড যান প্রতি বছর। সমীক্ষা বলছে ভ্রমণ তালিকায় পর্যটকরা থাইল্যান্ডের নাম প্রথম সারিতেই রাখেন। থাইল্যান্ডে যেতে হলে অনেকেই থাই এয়ারওয়েজ এর কথা ভাবেন। কিন্তু এবার সেই থাই এয়ারওয়েজ -এর নামে অভিযোগে উঠেছে দায়িত্বজ্ঞানহীন কান্ড, পক্ষপাতমূলক ও বৈষম্যমূলক আচরণের।
সৈয়দ ইসলাম নামে এক ভুক্তভোগী জানান তার ফেসবুকে, এক বছরের সময় ধরে থাই এয়ারওয়েজ ব্যাংকক এ বোর্ডিং ব্রিজ এর পরিবর্তে যাত্রীদের টারমাকে অবতরণ করাচ্ছে, টরমা থেকে বাসে টার্মিনালে স্থানান্তর করছে। ঢাকাগামী যাত্রীদের বেলায় একই ঘটনা ঘটছে। ২হাতে ব্যাগ নিয়ে সরু সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠা ও নিচে নামা সকল যাত্রীদের জন্য অত্যন্ত কষ্টসাদ্ধ একটি ব্যাপার।
এরপর বাস ধরে টারমাকে পৌঁছানো এবং আবার একটা সিঁড়ি বেয়ে তবেই বিমানে আরোহন। এই পুরো প্রক্রিয়াটি যথেষ্ট কষ্টসাধ্য, বিশেষ করে বয়স্ক এবং অসুস্থ যাত্রীদের জন্য। এই আরোহন ও অবতরণ প্রক্রিয়া হুইল চেয়ার ব্যবহারকারী অসুস্থ ব্যক্তিদের কষ্ট অনেকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে।

থাই এয়ারওয়েজ এমন অমানবিক ও পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে কেবল বাংলাদেশী ঢাকা থেকে আসা ও ঢাকা বাউন্ড যাত্রীদের ক্ষেত্রে।
কেননা যেসব যাত্রী সিঙ্গাপুর থেকে থাই এয়ারওয়েজ – এর মাধ্যমে ব্যাংকক ভ্রমণ করেন তাদের বিমান বোর্ডিং ব্রিজে পৌছে যায়। বাংলাদেশ থেকে ব্যাংকক ও ব্যাংকক থেকে বাংলাদেশ গমণকারীদের ক্ষেত্রে থাই এয়ারওয়েজ এমন বৈষম্যমূলক আচরণ করে থাকে।
সর্বশেষ ভুক্তভোগী সৈয়দ সেলিম আরো লিখেন, গত ২৮শে ফেব্রুয়ারী TG322 যোগে (সিট নং 15F ) ব্যাংকক যাওয়ার পথে তিনিই এরকম বৈষম্যমূলক আচরণের স্বীকার হন।
সেইসাথে তিনি যেদিন ব্যাংকক থেকে ঢাকা ফিরেন সেই সময় ৪মার্চ (TG321 সিট নং 16B) বিমানে উঠার সময় এক হৃদয় বিদারক ঘটনার সাক্ষী হন যা তাকে বাধ্য করে এমন একটি ঘটনা লিখতে। সেদিন একজন বয়স্ক এবং গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিকে থাই এয়ারওয়েজের বিমানে তোলা হয়, মালপত্র ও লাগেজ তোলার ফর্ক লিফট এর মাধ্যমে। এটা কেবল অমানবিকই নয়, চরম অবমাননাকর বটে। তাছাড়া বিমানে প্রবেশের পরেও এই ব্যাক্তির সঙ্গে সার্বক্ষণিক ৪জন থাই ডাক্তার ছিলেন, কিন্তু থাই এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ এই অসুস্থ মানুষটির জন্য কোনো বিশেষ ব্যবস্থা রাখেনি।
বাংলাদেশের যাত্রীগণ থাই এয়ারওয়েজের বিমানে ভ্রমণের জন্য দেড়গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে থাকেন।তারপরও ব্যাংকক এয়ারপোর্ট –এ বোর্ডিং ব্রিজ সুবিধা কেন দেওয়া হয় না আর কতদিন দেওয়া হবে না ?
ভুক্তভোগী এই বৈষম্যমূলক আচরণের জন্য তীব্র প্রতিবাদ জানান। সেইসাথে সকলকে থাই এয়ারওয়েজ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আহ্বান জানান।
থাই এয়ারওয়েজ যদি বাংলাদেশী ন্যায্য সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করতেই থাকে, তবে তাদের দশা নাক উঁচু ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এর মতো হতে পারে। অন্যান্য এয়ার লাইনস এর ভাড়া সহ নানান সুযোগ সুবিধার সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজকে একদিন লেজ গুটিয়ে চলে যেতে হয়েছিল। কারণ ঢাকায় তাদের অপারেশন ছিল মনোপলি, এবং তারা যাত্রী–বান্ধব ছিল না।