করোনাভাইরাস নিয়ে ভয় ও কিছু অপ্রয়োজনীয় আতঙ্ক

করোনাভাইরাস নিয়ে ভয় ও আতঙ্কের অনেক কিছু আছে। কিন্তু কিছু অপ্রয়োজনীয় আতঙ্ক থেকে মুক্ত থাকতে যেসব তথ্য জেনে রাখা ভালো-
করোনাইভাইরাসে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগীই বয়স্ক, অন্ততপক্ষে বয়স ৪০ এর বেশি। সবচেয়ে কম বয়সী রোগীর বয়স ১৩-১৪। তাই শিশুরা এখনো এ ভাইরাস থেকে মুক্ত, এটা বলা যায়।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন, তাদের আগে থেকেই ক্যান্সার, হার্ট অ্যাটাক বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল। অর্থাৎ বোঝা যাচ্ছে যারা আগে থেকেই অসুস্থ এবং যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদের ঝুঁকি বেশি।
করোনাভাইরাস নামে আমরা যেটাকে এখন দেখছি, সেটার নাম আসলে করোনাভাইরাস নয়। এই ভাইরাসটি করোনাভাইরাস পরিবারের একটি ভাইরাস। এটি এতটাই নতুন যে, এখনো কোনো নামকরণ করা হয়নি। করোনাভাইরাস পরিবারে আরও অনেক ভাইরাস আছে। ২০০২ সালে ছড়িয়ে পড়া SARS এমন আরেকটি করোনাভাইরাস। সবগুলো করোনাভাইরাসই প্রাণীদের মাধ্যমে ছড়ায়। অন্তত ৭ ধরণের করোনাভাইরাস আছে, যেগুলো মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে।
করোনাভাইরাসের এখনো কোনো চিকিৎসা আবিস্কৃত হয়নি। এন্টিবায়োটিক এক্ষেত্রে কাজ করবে না। কারণ এটি একটি ভাইরাস, আর এন্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে। ডাক্তাররা এখন একটি এন্টভাইরাল ট্রিটমেন্ট আবিস্কার করার চেষ্টা করছেন।
পশ্চিম আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়া ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে মারা যাওয়ার হার ছিল অর্ধেকেরও বেশি। ২০০২ সালে SARS করোনাভাইরাসের কারণেও বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। ওই ভাইরাসে আক্রান্তদের নিহতের হার ছিল ১০ শতাংশ।
বর্তমান যে করোনাভাইরাসের কথা আলোচনা হচ্ছে, এখানে মৃতের হার দুই শতাংশ (২%) ( আক্রান্ত প্রায় ৫,০০০, নিহত ১০৬, আপডেট: ২৮ জানুয়ারি)। তাই, এটা এখনো পর্যন্ত ইবোলা বা SARS এর চেয়ে কম ভয়ঙ্কর। তবে এটার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিক হচ্ছে আক্রান্তদের মধ্যে লক্ষণ দেখা যাওয়ার আগেই এই ভাইরাসটি একজন থেকে অন্যজনে ছড়ায়।
ইবোলা বা অন্যান্য ভাইরাসের বেলায় দেখা গেছে যে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা যাওয়ার পর রোগীদের থেকে ভাইরাস অন্য মানুষের কাছে ছড়াচ্ছে। কিন্তু এই ভাইরাসটির বেলায় যেহেতু লক্ষণ দেখা যাওয়ার আগেই ছড়িয়ে যাচ্ছে, তাই বোঝার উপায় থাকছে না যে কে আক্রান্ত আর কে আক্রান্ত না। আপনি যার সঙ্গে মিশছেন, তাকে আপাতদৃষ্টিকে সুস্থ মনে হলেও তার কাছ থেকে আপনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন।
এই পোস্টটি অভিজ্ঞ সাংবাদিক মিজানুর রহমান -এর ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত