হাতে বাড়তি সময় আছে? তাহলে বাগান করায় মন দিন

সারাক্ষণ মন খারাপ হয়ে যাওয়ার মতো খবরই কেবল শুনতে পাওয়া যায় আজকাল, ঘরের ভিতরে থাকতে থাকতে প্রাণটাও হাঁফিয়ে উঠছে, তাই না? বই পড়ে আর টিভি দেখে যাঁদের ক্লান্ত লাগছে, মনে হচ্ছে যে একদম অন্যরকম কিছু একটা করলে হত, তাঁরা এই অবসরে বাগান করায় মন দিতে পারেন। বিপাশা বসু বা তনুশ্রী চক্রবর্তীর মতো সেলেব্রিটিরা ঠিক তেমনটাই করছেন। গাছ পোঁতায় মন দিয়েছেন সেফ আলি খান ও তাঁর পুত্র তৈমুরও, সে ছবি নিজের ইনস্টাগ্রাম পেজে পোস্ট করেছেন করিনা কাপুর নিজেই।
না, বাগান করার জন্য বিরাট জায়গার প্রয়োজন নেই একেবারেই। আপনি নিজের একচিলতে বারান্দায় বা জানলার গ্রিলের ফাঁকেও গাছ লাগাতে পারেন। গোড়াতেই আপনি বাহারি টব পাবেন না, খানিকটা সাধারণ মাটি জোগাড় করার চেষ্টা করুন কেবল। আশপাশে কারও গাছের শখ থাকলে চেয়ে জোগাড় করতে পারেন। বাড়িতে তুলসী, কারিপাতা, অ্যালো ভেরা বা নয়নতারা গাছ থাকলে তার গোড়া থেকেও খানিক আলগা মাটি তুলে নেওয়া যায়। চা খেয়ে পাতা ফেলে দেবেন না, আনাজপাতি বা ডিমের খোলাও কোনও বদ্ধ, মুখ ঢাকা কৌটোয় জমিয়ে রেখে দিন। কয়েকদিন পরেই সার তৈরি হয়ে যাবে। তার খানিকটা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে নিলেই আপনার প্রাথমিক কাজ হয়ে গেল।
এবার প্রশ্ন, লকডাউনের সময় আপনি গাছের বীজ পাবেন কোথায়? টবই বা কিনবেন কোত্থেকে? দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর আগে দেওয়া যাক। এখনি টব কেনার জন্য ব্যস্ত হওয়ার দরকার নেই। বাতিল মগ, বালতি, গামলা সবার বাড়িতেই থাকে এক-আধটা, তাই দিয়ে শুরু করুন। একেবারে নিচে কেবল জল যাওয়ার জন্য একটি ছিদ্র করে নিতে হবে। লকডাউন উঠলে এবং গাছ খানিক বড়ো হলে না হয় টবে স্থানান্তরিত করে দেবেন! আপাতত আপনার রান্নাঘরে যা আছে, তাই দিয়ে বাগান করার কথা ভাবতে পারেন। যেমন ধরুন ধনে, টোম্যাটো, শসা, লঙ্কা ইত্যাদি। প্রতিটির বীজ সহজেই মিলবে। টোম্যাটো পাতলা পাতলা স্লাইসে কেটে লাগাতে পারেন, শাঁস থেকে বীজ বের করেও লাগানো সম্ভব। টব এমন জায়গায় রাখুন যা রোদ আর ছায়া দুটোই পায় যথেষ্ট পরিমাণে। রোজ জল দেবেন।
বাগান করলে কি সত্যিই স্ট্রেস কমে? এ বিষয়ে খুব নিশ্চিতভাবে প্রামাণ্য তথ্য দেওয়া না গেলেও অনেকেই বলেন যে প্রকৃতির কাছাকাছি থাকলে মন ভালো থাকে। সেই সঙ্গে গাছ করতে গেলে আপনার গায়েও খানিক রোদ লাগতে বাধ্য। তা ছাড়া বীজ থেকে গাছ হওয়া, বা ফল ধরার জন্য ধৈর্য ধরতে হয়। সেটাও মানুষ হিসেবে আপনাকে অনেক উন্নত করে তোলে।