বিচ্ছেদের কিংবা ডির্ভোসের সিধান্ত নিন ঠাণ্ডা মাথায়

বিয়ে একটি চিরন্তন সত্য প্রক্রিয়া। কোনও নারীই চায় না, সংসার ভেঙ্গে যাক। ভালবাসার প্রিয় মানুষটিকে ছেড়ে একা হতে ভাল লাগবে না। তারপর বাস্তব এবং পরিস্থিতির চাপে কখনও বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কখনও যদি এরকম পরিস্থিতির স্বীকার হন তাহলে অবশ্যই বিচ্ছেদের আগে ঠান্ডা মাথায় ভেবে নিন।
আপনারা দু’জনে আলাদা আলাদা বিষয়কে অগ্রাধিকার দেন
এক একটা মানুষের অগ্রাধিকারের বিষয় আলাদা হবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু একসঙ্গে থাকতে হলে কিছু কিছু বিষয়ে সমমনস্ক না হলে মুশকিল। যেমন ধরা যাক, আপনি সন্তান চান অথচ আপনার স্বামী চান না। এরকম ক্ষেত্রে আপনাদের কোনও একজনকে নিজের মানসিকতা বদলাতে হবে। আবার ধরুন, আপনার প্রেমিক বিয়ের জন্য তৈরি কিন্তু আপনি বিয়ে নামের প্রতিষ্ঠানটায় বিশ্বাসই করেন না। এ ক্ষেত্রেও আলোচনার মাধ্যমে কোনও সমাধানে পৌঁছনো অসম্ভব। মানসিকতা বা প্রায়োরিটিতে তফাত থাকলে তা কাটিয়ে ওঠা কঠিন, কারণ এ ক্ষেত্রে একজনের খুশি বা ইচ্ছে অন্যজনের পথে সরাসরি বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই রিলেশনশিপ কাউন্সেলরদের মতে, সম্পর্কের প্রথম ধাপেই বিয়ে, সন্তানসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিক সম্বন্ধে খোলাখুলি কথা বলে নেওয়া দরকার। মতের অমিল হলে আর বেশি দূর না এগনোই ভালো।
বিষিয়ে যাওয়া সম্পর্ক
স্বামী স্ত্রীর মধ্যে যদি রাতদিন অশান্তি চলতে থাকে, যদি পারস্পরিক সম্মান ও বিশ্বাস না থাকে, তা হলে একসঙ্গে গোটা জীবন কাটানো সম্ভব নয়। একটা সম্পর্ক স্থায়ী করতে হলে পারস্পরিক সম্মান, বিশ্বাস, স্বচ্ছতা থাকা দরকার। স্ত্রী স্বামীকে যে ভালোবাসা, সম্মান দিচ্ছেন, স্বামীও তা ফিরিয়ে দেবেন, সুস্থ সম্পর্কে এটাই বাঞ্ছনীয়। তাই সম্পর্ক যদি বিষিয়ে যায়, কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করবেন না।
স্বামী যদি বিশ্বাসভঙ্গ করেন
স্বামী বিশ্বাসভঙ্গ করছেন জানতে পারলে যে কোনও মেয়ের পৃথিবীটা রাতারাতি বদলে যেতে পারে। আরও বড়ো সমস্যা, স্বামী প্রতারণা করলেও তাঁর প্রতি ভালোবাসা যেহেতু রাতারাতি উবে যেতে পারে না। অনেক মেয়েই সেই মুহূর্তে সংসার ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ভাবেন এবং তা যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত হলেও এ ক্ষেত্রে একটু মাথা ঠান্ডা রাখতেই হবে। নিজেকে সময় দিন। প্রাথমিক ঝড়টা কেটে গেলে যুক্তি দিয়ে ভাবনাচিন্তা করুন। বিচ্ছেদের পথে হাঁটলে আপনার জীবনে কী কী পরিবর্তন আসবে ভাবুন, সেই বদলগুলোর সঙ্গে যাতে মানিয়ে নিতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করুন। আর্থিক স্বনির্ভরতা, প্রিয়জনের সমর্থন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই দিকগুলো ঠিক থাকলে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করবেন না।
সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন
লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপে যাঁরা থাকেন, তাঁরা হামেশাই বিষাদ, উদ্বেগের শিকার হন। ২৮ বছর বয়সী শান্তা যেমন। চার বছরের সম্পর্কের পরেও প্রেমিকের কাছ থেকে কোনও প্রতিশ্রুতি না থাকাটাও তাঁকে সমস্যায় ফেলছিল। সম্পর্কের ভবিষ্যৎ না থাকা সত্ত্বেও কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছিলেন না তিনি। শেষ পর্যন্ত কাউন্সেলরের শরণাপন্ন হন মেঘা। কাউন্সেলর তাঁকে পরামর্শ দেন সম্পর্কের ইতিবাচক আর নেতিবাচক দিকগুলো বিবেচনা করে দেখতে। কাউন্সেলরের দেখানো পথে ভবিষ্যৎহীন সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন মেঘা। আপনিও যদি এই পরিস্থিতিতে পড়েন, মন শক্ত রেখে সিদ্ধান্ত নিন।